ম’দ পানের পর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছা’ত্রী মাধুরী ও তার ব’ন্ধু আরাফাতের অস্বা’ভাবিক মৃ’ত্যুর পর এখন একে একে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে অন্ধকার জগতের সব চাঞ্চল্যকর তথ্য। ডিজে পার্টি, ম’দ পার্টি কিংবা শিশা লাউঞ্জে’র রঙিন জগতের আলো-আঁধারে ডিজে নেহা এই ঘ’টনায় দায়ের করা মা’মলার আ’সামি নেহা ওরফে ডিজে নেহা। এই নেহার অন্যতম টার্গেট ছিলো শিল্পপতি কিংবা তাদের সন্তানরা। হাতের নাগালে কোনো শিল্পপতি পেয়ে গেলেই যেনো কপাল খু’লে যেতো তার। কলাকৌশলে বিভিন্ন রকমের অসহায়ত্ব প্র’কাশ করেই জায়গা করে নিতো টার্গেট’কৃতদের মনে
যে শিল্পপতিরা নেহার শি’কার: নেহার ব্লাকমেইলিংয়ের কবলে পড়েছেন দেশের শী’র্ষ পর্যায়ের শিল্পপতিও। এছাড়া রয়েছেন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের শী’র্ষ পর্যায়ের একাধিক গাড়ি ব্যবসায়ী। যারা গাড়ি আম’দানিকারক এবং গাড়ির বিক্রেতা।
যেভাবে শিল্পপতিদের শি’কার ক’রতো নেহা: শিল্পপতিদের মনের গ’ভীরে জায়গা করে নিতে প্রয়োজনে দে’হ বিলিয়ে দিতে কার্পণ্য ক’রতো না নেহা। প্রয়োজনে তার আওতায় থাকা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সু’ন্দরী তরুণীদের ম্যানেজ করে ওই শিল্পপতিদের স’ঙ্গে একান্তে সময় কা’টানোর সুযোগ করে দিতো এই নেহা। এর বিনিময়ে হাতিয়ে নিতো মোটা অংকের টাকা কিংবা দামি গিফট। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ-তরুণীদের সন্তুষ্ট রাখতো ডিজে, ম’দ এবং শিশা পার্টিতে দাওয়াত দিয়ে।
এদিকে শিল্পপতিদের স’ঙ্গে ওইসব একান্তের ছবি কিংবা ভিডিও গোপনে ধারণ করে নিজ সংরক্ষণে রাখতো নেহা। একই সময়ে সংগ্রহ করে ফেলতো ওইসব শিল্পপতির মুঠোফোন নম্বর, যে প্রক্রিয়ায় যু’ক্ত হয়ে যেতো তাদের ফেসবুকসহ অন্যান্য অনলাইন মাধ্যমে। ওই শিল্পপতিদের ফেসুবকসহ অন্যান্য অনলাইন মাধ্যম ঘেঁটে একে একে যোগাড় ক’রতো তাদের বাবা-মা, স্ত্রী’ কিংবা নিকটাত্মীয়দের স’ঙ্গে যোগাযোগের উসিলা। আবার এই তালিকা থেকেই অনলাইনে আরও শি’কার খুঁজে বেড়াতো সে। এসব কু-ক’র্মে তার ডান হাত হিসেবে কাজ ক’রতো তারই চাচাতো ভাই শাফায়াত জামিল বিশাল।
কে এই বিশাল? তার পুরো নাম শাফায়াত জামিল বিশাল। এই তরুণ অ’পক’র্মের মহারাণী খ্যাত ডিজে নেহা ওরফে কুইন নেহার স’ম্পর্কে চাচাতো ভাই। বিশাল নেহার ডান হাত হিসেবে দায়িত্ব পা’লন ক’রতো। ইউল্যাবের শিক্ষার্থী মাধুরীর মৃ’ত্যুর পরই বেরিয়ে পড়ে সু’ন্দরী নেহার ভেতরে থাকা কালো বিড়াল। বিশাল নামের তরুণ প্রায় সার্বক্ষণিকই নেহার স’ঙ্গে ই থাকতো বলে জা’না গেছে। শিশা লাউঞ্জে নেহা ও বিশালের গোপন নেহা তার মুঠোফোনে টার্গেট’কৃতদের নাম সংরক্ষণ ক’রতে বিশেষ কৌশল অবলম্বন ক’রতো।
তথ্য পাওয়া গেছে, উত্তরার ব্যাম্বু স্যুট রেস্টুরেন্টে ইউল্যাব শিক্ষার্থীদের ম’দ পান করাতে নেহা ও তার খুব কাছের ব’ন্ধু আরাফাত ভূমিকা পা’লন করে। ম’দ পানের পর ওই আরাফাতও মা’রা গেছে। নেহার ফোনেই তার চাচাতো ভাই শাফায়াত জামিল বিশাল এয়ারপোর্ট এলাকা থেকে ম’দ কিনে নিয়ে যায় ওই রেস্টুরেন্টে। বিশাল নেহার ক্লায়েন্টদের তালিকা সংরক্ষণ ক’রতো। এছাড়াও অ’বৈ’ধ দরদামে সে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দায়িত্বপা’লন ক’রতো। রাজধানীর মোহাম্ম’দপুর থা’নায় ইউল্যাব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছা’ত্রী মাধুরী এবং আরাফাতের মৃ’ত্যুর পর ‘ধ’র্ষণ’ মা’মলায় অ’জ্ঞাত আ’সামি হিসেবে নিজেই আ’দালতে গিয়ে উপস্থিত হন শাফায়াত জামিল বিশাল। পরে আ’দালত তাকে কা’রাগারে পাঠিয়ে দেন।
মোবাইলে ‘ক্লাইন্ট-১,২,৩’ নামের সেইভ রয়েছে বহু নম্বর: নেহার খুব পছন্দের মোবাইল ফোন ব্রান্ড ‘আইফোন’। টার্গেট’কৃত শিল্পপতি ও ধনী যুবকদের নম্বর ‘ক্লায়েন্ট-১’, ‘ক্লায়েন্ট-২’, ‘ক্লায়েন্ট-৩’ এমন ধারাবাহিকভাবেই মোবাইল-ফোনে সংরক্ষণ করে রাখতো ডিজে নেহা।
৬ মাসের পরিচয়ে চট্টগ্রামের গাড়ি ব্যবসায়ী জি’ম্মি: ২০২০ সালের মা’র্চে নেহার সাথে ইংরেজি ‘আর’ আদ্যাক্ষরে শুরু নামের চট্টগ্রামের এক গাড়ি ব্যবসায়ীর পরিচয় ঘ’টে। এর এক পর্যায়ে ওই ব্যবসায়ীকে একান্ত স’ম্পর্কে জড়িয়ে ইমোশনাল ব্লাকমেইলিং ক’রতে থাকে। ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে গত মা’র্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত, ৬ মাসে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
৪ মাসে আরেক গাড়ি ব্যবসায়ীর ১৫ লাখ: চট্টগ্রাম’র ওই গাড়ি ব্যবসায়ীর ফেসবুক থেকে নেহার পরিচয় হয় ইংরেজি ‘জে’ আদ্যাক্ষর নামের ঢাকার এক গাড়ি ব্যবসায়ীর স’ঙ্গে । এই দুই গাড়ি ব্যবসায়ী একে অ’পরের ব’ন্ধু। চট্টগ্রামের ব’ন্ধুকে নেহা যে ব্লাইমেইলিং করেছে তা ঢাকার এই ব’ন্ধু পরে টের পায়। তবে ইতোমধ্যে গত সেপ্টেম্বর পর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ঢাকার এই গাড়ি ব্যবসায়ীকেও একই রকমের ফাঁদে ফে’লে ৪ মাসে ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এসব টাকা বিকাশসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় হাতিয়ে নেয় ডিজে নেহা। এছাড়াও এই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২০২০ সালের ৭ ডিসেম্বর যমুনা ফিউচার পার্ক শপিং মলের একটি মোবাইলের দোকান থেকে পছন্দের ‘আইফোন টুয়েলভ প্রো ম্যাক্স’ গিফট নিয়েছে নেহা। যেটির মূল্য ছিলো ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকা।
আন্তর্জাতিক ইয়া’বা ডন কার্লোসের স’ঙ্গে নেহার সখ্যতা: আন্তর্জাতিক ইয়া’বা কারবারিদের মধ্যে কার্লোস অন্যতম। তার পুরো নাম আবু জাফর মোহাম্ম’দ কার্লোস। সে ইয়া’বা ডন কার্লোস নামেও পরিচিত। ২০১৭ সালের মাঝামাঝিতে ঢাকায় গ্রে’প্তার হয়েছিলো ‘আবু জাফর মোহাম্ম’দ কার্লোস’ নামের আন্তর্জাতিক ইয়া’বা ব্যবসায়ী। তার স’ঙ্গে জড়িয়ে মিডিয়ায় আলোচনায় উঠে আসে বেশ কজন মডেল অ’ভিনেত্রীর নাম। অনন্য মামুন পরিচালিত ‘অস্তিত্ব’ চলচ্চিত্রের প্রযোজক কার্লোস। অস্তিত্ব সিনেমা বানানোর পর কার্লোস ঢাকার সিনেমা পাড়ার নামি-দামি নায়িকাদের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। এসব নায়িকার অনেককে নিয়ে তিনি থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় যাতায়াত শুরু করেন। এদের কয়েক জনের স’ঙ্গে তিনি লিভ টুগেদারও করছিলেন। এই কার্লোসও ডিজে নেহার খুব কাছের এবং ঘনিষ্ঠ একজন ছিলো বলে জা’না গেছে।